॥ মাসুদ রানা, বাগেরহাট জেলা প্রতিনিধি ॥
বি শ্ব যখন নবায়নযোগ্য শক্তির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, তখন এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি) এর জীবাশ্ম জ্বালানি প্রকল্পে বিনিয়োগ জলবায়ু সংকটকে তীব্র করছে। এডিবি’র বিনিয়োগ বাংলাদেশের মতো জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশের জন্য মারাত্মক হুমকি হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
অন্যদিক রূপসায় ৮০০ মেগাওয়াটের এলএনজি ভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মান প্রায় শেষ হলেও সেখানে গ্যাস সরবরাহের নিশ্চয়তা নেই। এরফলে এই প্রকল্পও অচল সম্পদে পরিণত হবে এবং সরকারকে হাজার হাজার কোটি টাকা ক্যাপাসিটি চার্জ দিতে হবে।
নবায়নযোগ্য শক্তিতে বিনিয়োগ না করে ফসিল ফুয়েল’র ওপর নির্ভরতা দেশের অর্থনীতি, পরিবেশ ও সমাজকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। এডিবি-কে জীবাশ্ম জ্বালানি শক্তি পরিহার করে অবিলম্বে নবায়নযোগ্য জ্বালানি শক্তি ও পরিবেশবান্ধব প্রকল্পে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। এডিবি’র বার্ষিক সভার প্রাক্কালে ২৯ এপ্রিল মঙ্গলবার সকালে মোংলার নারিকেলতলায় মোংলা নাগরিক সমাজ আয়োজিত প্রতিবাদী প্রচারাভিযানে বক্তারা একথা বলেন।

মঙ্গলবার সকাল ১১টায় প্রতিবাদী প্রচারাভিযানে সভাপতিত্ব ও প্রধান অতিথির বক্তৃতা করেন মোংলা নাগরিক সমাজের আহ্বায়ক সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ নূর আলম শেখ। প্রতিবাদী প্রচারাভিযানে বক্তব্য রাখেন নাগরিক নেতা পরিবেশযোদ্ধা মোঃ হাছিব সরদার, নারীনেত্রী ছবি হাজরা, আইরিন বিশ্বাস, ইয়ুথ লিডার মেহেদী হাসান, রোজি বিশ্বাস, বিভা বিশ্বাস নাগরিক নেতা অসীম বিশ্বাস, সঞ্জিত বিশ্বাস প্রমূখ। প্রতিবাদী প্রচারাভিযানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় মোংলা নাগরিক সমাজের আহ্বায়ক পরিবেশযোদ্ধা মোঃ নূর আলম শেখ বলেন এডিবি বাংলাদেশের বিদ্যুৎ খাতে মোট ৪.৮৮ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে।
এর মধ্যে ৮২.৯% চলে গেছে জীবাশ্ম জ্বালানি প্রকল্পে, সৌর বিদ্যুৎ মাত্র ২.৫৫% এবং বায়ু শক্তিতে কোন বিনিয়োগই হয়নি। যেখানে প্রতি মেগাওয়াট সৌর বিদ্যুতে বিনিয়োগের খরচ ০.৫১ মিলিয়ন ডলার, সেখানে জীবাশ্ম জ্বালানিভিত্তিক প্রকল্পে প্রতি মেগাওয়াটে ২.০৪ মিলিয়ন ডলার ব্যয় করা হচ্ছে। নাগরিক নেতা হাছিব সরদার বলেন খুলনার ১৫০ মেগাওয়াটের গ্যাস টারবাইন বিদ্যুৎকেন্দ্রকে ২২৫ মেগাওয়াট কম্বাইড সাইকেল প্রকল্পে উন্নীত করতে এডিবি অতিরিক্ত ১০৪.১১ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে। তবু ্ও গত ১১ বছরে এই প্রকল্পের জন্য সরকারকে ১,৮২৪ কোটি টাকা ব্যয় করতে হয়েছে।

অন্যদিক রূপসায় ৮০০ মেগাওয়াটের এলএনজি ভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মান প্রায় শেষ হলেও সেখানে গ্যাস সরবরাহের নিশ্চয়তা নেই। এরফলে এই প্রকল্পও অচল সম্পদে পরিণত হবে এবং সরকারকে হাজার হাজার কোটি টাকা ক্যাপাসিটি চার্জ দিতে হবে। উল্ল্যেখ্য আগামি ৪-৬ মে ইতালির মিলান শহরে এডিবির অনুষ্ঠিতব্য ৫৮তম বার্ষিক সভার প্রাক্কালে শুধু মোংলা নয়, বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন শহরে নাগরিক সমাজের প্রতিবাদ আরো জোরালো হচ্ছে, যাতে উন্নয়ন সংস্থাগুলো তাদের বিনিয়োগ নীতিতে জলবায়ু ন্যায্যতা ও টেকসই উন্নয়নের গুরুত্ব অনুধাবন করে।
global sangbad 24 অনলাইন নিউজ পোর্টাল